বাচ্চার জ্বর কিভাবে কমাবেন
প্রথম কথা জ্বর কোন অসুখ নয়, জ্বর বিভিন্ন রোগের উপসর্গ। তাই প্রকৃত কারণ দুর করাই জ্বর সারানোর মূল চিকিৎসা। কিন্তু বেশির ভাগ ক্ষেত্রে সাধারণ ভাইরাল ইনফেকশনে জ্বর হতে পারে যা ফ্লু নামে পরিচিত। বাচ্চাদের জ্বর নিয়ন্ত্রণ অতী জরুরী। কারণ বাচ্চাদের জ্বর খুব দ্রুত বেড়ে যেতে পারে। জ্বর বেশি হলে বাচ্চাদের (সাধারণত ২ বছর পর্যন্ত) খিচুনী হতে পারে (Febrile convulsion), জ্বরের খিচুনী হতে বাচ্চার মস্তিষ্কে ক্ষতি হয়ে বিকলঙ্গ হয়ে যেতে পারে। তাই বাচ্চার জ্বর হবার সাথে সাথে এর নিয়ন্ত্রণ ও চিকিৎসার ব্যবস্থা নিতে হবে।
জ্বর কমানোর জন্য নিম্নোক্ত ধাপে এগিয়ে যাবেন।

১.প্রথম ও শেষ কথা জ্বর হলেই প্রচুর তরল খাবার দিতে হবে। বুকের দুধ এক্ষেত্রে প্রথম ও প্রধান খাবার।
২.বুকের দুধের পাশাপাশি অন্যান্য তরল খাবার একটু পর পর দিন। মনে রাখতে হবে একবারে প্রচুর তরল খাবার দিলে বাচ্চা বমি করে দিতে পারে। তাতে বাচ্চার আরো ক্ষতি হবে।
৩.তরল খাবারের মধ্যে তরল পানীয়, খাবার স্যালাইন, ডাবের পানি, বিভিন্ন ফলের রস, জুস, শরবত বানিয়ে যেটা খেতে চায় বাচ্চাকে অল্প অল্প করে (আধা চামচ বা তারও কম) ২০ মিনিট/৩০মিনিট পর পর দিন। একবারে বেশি দেবেন না। ফোটা ফোটা করে ও দিতে পারেন।
৪.শরীর থেকে অতিরিক্ত তাপ সরানোর জন্য গায়ে ঠান্ডা পানির পট্টি দিতে পারেন জল পট্টি। যেমনঃ হট ওয়াটার ব্যাগের মধ্যে ঠান্ডা ফ্রিজের পানি দিয়ে একটি সুতি কাপড় দিয়ে ব্যাগ পেচিয়ে বাচ্চার মাথা, পিঠ, বুক, পেট পায়ের অংশ থেকে খুব সহজেই তাপ সরিয়ে নিতে পারেন।
৫.বচ্চার ওজন অনুযায়ী প্যারাসিটামল সিরাপ বা ড্রপ খাওয়াবেন। জ্বর না থাকলে ও ৬ ঘন্টা পর পর কমপক্ষে ৩ দিন প্যারাসিটামল খাওয়াবেন। তবে অবশ্যই যথেষ্ট বুকের দুধ অথবা পানীয় খাওয়াতে না পারলে প্যারাসিটামল সঠিক কাজ করবে না।
৬.বাচ্চার বমি করলে, প্যারাসিটামল সিরাপ না খেতে পারলে প্যারাসিটামল সাপোজিটরী (Suppository) পায়খানার রাস্তায় দিন। প্যারাসিটামল এর ডোজ= ১০-১৫mg প্রতিকেজি ওজনের জন্য। এরপর ও বাচ্চার জ্বর না কমলে অথবা জ্বর তিন দিনের বেশি থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। হাতের কাছে সব সময় বাচ্চার পছন্দ অনুযায়ী প্যারাসিটামল ড্রপ, সিরাপ, এবং সাপোজিটরী রাখুন। বাচ্চার হঠাৎ জ্বর বেশী উঠে গেলে অনতিবিলম্বে চিকিৎসকের কাছে/হাসপাতালে নিয়ে যান।
কখনও ঝুকি নিবেন না। দিনেই চিকিৎসা শুরু করুন। দিন নষ্ট করে রাতে বিপদে পড়বেন না।