সুস্থ্য হৃদপিন্ডের জন্য নির্দেশিকা

১। শরীরের ওজন ঠিক রাখুন
প্রতি ১০% অতিরিক্ত ওজন হ্রাসের সাথে ৭.৬% ক্ষতিকর চর্বি (খউখ) ও ১৫% হৃদরোগের ঝুঁকি হ্রাস পায়। প্রতি ১০ কেজি ওজন হ্রাসের জন্য ৫-২০ সসঐম সিষ্টোলিক রক্তচাপ হ্রাস পায়।
শরীরের ওজন ৬০ কম ও অত্যান্ত হালকা কাজ করেন এমন ব্যক্তি নিুের খাদ্য তালিকা অনুসরণ করুন ঃ দৈনিক ক্যালরি চাহিদা ও কাঙ্খিত ওজন অনুযায়ী খাদ্যের পরিমান বাড়াতে পারেন-
সুহৃদ খাবার তালিকা (Heart Healthy Diet)
চর্বি- ১৬১ গ্রাম, আমিষ- ৭২ গ্রাম, শর্করা- ২৫৭ গ্রাম,
        কোলেস্টরল- ৩০০ মি. গ্রামের নিচে (১৮১০ কিলোক্যালারী)

সকালের না¯তা
খাবার    পরিমাণ  
শুকনা রুটি/পাউরুটি    ৭৫গ্রাম/ছোট ৩টা (৬-৭ ইঞ্চি)    ২১০ কিঃক্যালরী
ডিম (কুসুম ছাড়া)    ছোট ১টা একদিন পরপর      ২০কিঃক্যালরী
সবজী    ১ কাপ/পরিবর্তে ১/২ কাপ ঘন ডাল     ৩০কিঃক্যালরী
চা    ১ কাপ, দুধ (সামান্য চিনি)     ৩০কিঃক্যালরী
সকাল  ১১.০০ টা
খাবার    পরিমাণ    কিঃক্যালরী
মৌসুমী ফল    বড়- ১টা    ১০০
বিস্কুট     ১-২টা    ৩০
চা    ১ কাপ    ৩০
দুপুরের খাবার
খাবার    পরিমাণ    কিঃক্যালরী
ভাত     ১০০ গ্রাম/ ২.৫ কাপ    ৩৫০কিঃক্যালরী
মাছ/মাংস     ৬০ গ্রাম/ ছোট দুই টুকরা    ৩০কিঃক্যালরী
শাক-সবজি    ১ কাপ    ২০কিঃক্যালরী
সালাদ (টমেটা, শশা, গাজর)    আধা কাপ     ৩০কিঃক্যালরী
ডাল    ২৮ গ্রাম/ ১ কাপ মাঝারী ঘণ    ৮০কিঃক্যালরী

বিকাল ৫.০০ টা –
খাবার    পরিমাণ    কিঃক্যালরী
এগ নুডুল্স    ১ কাপ     ২০০কিঃক্যালরী
চা     ১ কাপ, দুধ ছাড়া (কম চিনি)    ৩০কিঃক্যালরী
অল্প কিছু ফল    –    ২০কিঃক্যালরী

রাতের খাবার
খাবার    পরিমাণ    কিঃক্যালরী
ভাত/ রুটি    ১০০ গ্রাম/ ২.৫ কাপ বা ৩-৪ টা রুটি    ৩৫০কিঃক্যালরী
মাছ/মুরগী/ডাল    ৬০ গ্রাম, ছোট দুই টুকরা বা ডাল
 ১ কাপ মাঝারী ঘণ     ৮০কিঃক্যালরী
শাক-সবজী    ১ কাপ     ৩০কিঃক্যালরী
দুধ (সর ছাড়া)    ২৫০ মিলি/বড় ১ কাপ    ৮০কিঃক্যালরী

 

  •  দৈনিক মোট খাদ্য শক্তির কমপক্ষে ৪৮% শর্করা জাতীয় খাবার থেকে গ্রহণ করা উচিত।
  •  দৈনিক মোট খাদ্য শক্তির ১০% এর বেশী চিনি থেকে গ্রহণ করা উচিত নয়।
  •  দৈনিক মোট খাদ্য শক্তির ৩০% চর্বি জাতীয় খাবার থেকে গ্রহণ করা উচিত।
  •  প্রতিদিন ৫ গ্রামের বেশী লবণ খাওয়া উচিত নয়।
  •  আঁশযুক্ত খাবার, রঙ্গিন তাজা ফল, সামুদ্রিক মাছ, দানাদার খাবার এ প্রচুর এন্টি অক্সিডেন্ট আছে যা হার্টের রক্ত নালীতে চর্বি জমতে দেয় না।   

যে সকল খাবার গ্রহণ করবেন ও বর্জন করবেন

    যা গ্রহণ করবেন    

ছোট কাটাওয়ালা মাছ, মিষ্টি পানির তৈল ছাড়া বড় মাছ (চিংড়ি ছাড়া) সামুদ্রিক মাছ, কচি মাংস (চামড়া ছাড়া)
ডিমের সাদা অংশ সপ্তাহে দুই থেকে তিনটি (কুসুম সহ ডিম   কর্মজীবিদের জন্য)
সব ধরণের মৌসুমী সতেজ বিভিন্ন রঙ্গিন ফল (খোসা সহ) ফলের রস জুসার দিয়ে সদ্য তৈরী
টাটকা রঙ্গিন ও আকর্ষণীয় যে কোন শাক ও সব্জী (প্রচুর পুষ্টি ভিটামিন, মিনারেল এবং আঁশ আছে)
ননী বিহিন দুধ (সর ছাড়া), ইওগার্ট (দই) ছানা

সয়াবিন, সানফ্লাওয়ার, অলিভ ওয়েল, মার্জেরিন
আটা (ভূষিসহ) চাউল, ভূট্টা, যব, নুডলস, ডাল সহ সব ধরণের দানাদার খাবার

 

 

 

যা বর্জন করবেন

মাছের মগজ, গলদা চিংড়ি, বড় মাছের তৈল ও ডিম, গরু, খাসী ও হাঁসের মাংস, কলিজা, হাড়ের ভিতরের মজ্জা।
ডিমের কুসুম ও কুসুম মিশিয়ে তৈরী খাবার  (কেক, পুডিং ইত্যাদি)
নারিকেল ফলের রস
ঘি, বাটার বা ক্রিমে ভাজা শাক। নারিকেল দিয়ে রান্না করা খাবার।
ননী পূর্ণ দুধ, আইসক্রীম, চকলেট, ছানা, মাখন, ঘি  

নারিকেল তেল, সরিষার তেল, বাটার হইড্রোজেনেটেড মার্জেরিন

 ২। নিয়মিত পরিমিত ব্যয়াম করুন-
 অ্যারোবিকস ব্যায়াম করুন ঃ   
দ্রুত হাটা, জগিং (এক জায়গায় দৌড়ান), সাতার কাটা, সাইকেল চালানো, বাগান করা, ইত্যাদি অ্যারোবিকস এর অšতর্গত। হার্টের জন্য আরোবিকস সব থেকে ভাল ব্যায়াম।
 এ ছাড়া যে কোন কর্মতপরতা যাতে হৃদপিন্ড; ফুসফুস দীর্ঘক্ষণ ধরে ব্যবহৃত হয় সেগুলো এই ব্যায়ামের মধ্যে পড়ে।  
 অ্যারোবিকস এ ৬৩-৬৮ Kg ওজনের একজন ব্যাক্তির প্রতি ৩০ মিনিটে ২৪৬ ক্যালরি ব্যায় হয়। দৈনিক ৩০-৬০ মিনিট অ্যারোবিকস এর অভ্যাস করুন।

৩। সঠিক জীবন-যাপন পদ্ধতি মেনে চলুন –
ক) ধুমপান এ ক্ষুনি বর্জন করুন। প্রকাশ্যে ধুমপান একটি অসভ্যতা ও অভদ্রতার পরিচয় বহন করে ও অন্যের ক্ষতি করে। নিজেকে অভদ্র প্রমাণ করবেন না, অন্যের ক্ষতিকরার অধিকার আপনার নেই।
খ) সাদা পাতা, জর্দা, দোক্তা, গুল খাবেন না, মদ্যপান পরিহার করুন।   
গ) আবেগ, উত্তেজনা, দুঃচিšতা পরিহার করুন।
ঘ) হাসি খুশি থাকুন, প্রার্থনা করুন, হিংসা, পরশ্রীকাতরতা ও অন্যকে ঠকানোর বুদ্ধি বা চিন্তা পরিহার করার চেষ্টায় থাকুন।  
ঙ) শিশু; বন্ধুবান্ধব, স্ত্রী সন্তানদের সাথে নিয়মিত সময় কাটান।
চ) দুই বছরের অধিক জন্ম নিরোধন এবং করটিসন জাতীয় ঔষধ সেবন করবেন না।
ছ) উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস ইত্যাদি রোগের সঠিক সময়ে সঠিক চিকিৎসা করান।
ঞ) মনোবিজ্ঞানীরা প্রতিযোগীতা মূলক মনোভাব সম্পন্ন, উচ্চাকাংখী, সদা সর্তক, বেশী কাজের চাপ ও সামাজিক দায়িত্ব সম্পন্ন ব্যক্তিদেরকে Type ‘A’  personlity (ব্যক্তিত্ব) সম্পন্ন মানুষ হিসাবে চিহ্নিত করেছেন। এই ব্যক্তিত্ব সম্পন্ন মানুষ বেশী হৃদরোগে ভুগেন। ব্যক্তিত্ব বজায় রেখে দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টে ফেলুন হৃদরোগ থেকে মুক্ত থাকুন।   

ডাঃ টি আই খান ওয়াসিম

হৃদপিন্ড নির্যাতন বন্ধ করুন, সুস্থ থাকুন